ঈদের দিন মোর বাড়িত পোলাও, মাংস রান্না হবে, সেমাই রান্না হবে। তোমহরাও আসেন মোর বাড়ি দাওয়াত খাবা। এই বার ঈদত তোমাহক দাওয়াত খাওয়াম মুই। এভাবেই নিজের আনন্দে ঈদের দাওয়াত দিলেন মমতাজ বেগম। ৫ টাকায় ঈদ এর বাজার মুরগি, পোলাওর চাল, সেমাই, তেল, দুধ সহ আরো অনেক পন্য পাওয়ার পরে তার যেন আনন্দের শেষ নেই। ঈদ এ বাসার সবাইকে নিয়ে ভালো খাবার খেতে পারবে তাই জেলা প্রশাসক সহ সকলকে দাওয়াত দিলেন তিনি।

রোববার দুপুর ১২টায় ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড়মাঠে জুলুমবস্তি (সহায়) নামে একটি মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৫ টাকায় ঈদ বাজারের আয়োজন করে। ঈদ বাজারের মধ্যে রয়েছে- সেমাই, দুধ, চিনি, তেল, পোলাও চাল এবং একটি মুরগি। এবার সহায় এর তৃতীয় বার আয়োজনে প্রায় ১ হাজার পরিবারের মাঝে এই ৫ টাকায় ঈদ বাজার দেওয়া হয়।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, উত্তর রিজিউন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক য্রতি প্রসাদ ঘোষ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান, সহায় জুলুম বস্তির উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম শরিফ, ডা. শুভেন্দু কুমার, সভাপতি সুজন খান, সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন সাগর প্রমূখ।

 

৫ টাকায় ঈদ বাজার নিতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, তার পরিবারে সদস্য ছয়জন। এবার ঈদের আগে যেভাবে দ্রব্যর মূল্যে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে ঈদের জন্য আলাদা করে সেমাই-চিনি কেনা সম্ভব ছিল না তার পক্ষে। তবে জুলুমবস্তির এই ৫ টাকার বাজারের জন্য এবার ঈদে ভালো খাবার খেতে পারবে তার পরিবার। এমন বাজারের আয়োজনে যারা সহযোগীতা করেছে তাদের জন্য দোয়া করেছেন তিনি।

 

সংগঠনটির সভাপতি সুজন খান বলেন, ঈদের দিন কর্মহীন মানুষ যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে আনন্দে দিন কাটাতে পারে তাই পাঁচ টাকায় ঈদ সামগ্রী দিচ্ছি। সকলের সহযোগীতায় এই ঈদ বাজারের আয়োজন করা হয়। আর ঈদে উপহার পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষ।

 

তবে এই পাঁচ টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেয়েছি অসহায় মানুষরা যেন ক্রয় করে নেওয়ার অনুভূতি পায়। তারা বিষয়টি দান হিসেবে নিক সেটা আমরা চাই না। তাই এই নাম মাত্র পাঁচ টাকা নেওয়া হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, “সহায়” নামটি অনেক সুন্দর একটি নাম। সেই সাথে এই সংগঠনের কার্যক্রম গুলো অনেক সুন্দর। রমজানের প্রথম থেকেই এই সংগঠন ভর্তুকী বাজার চালু করে মানুষের সেবা শুরু করেছে। এখন ঈদ এ ৫ টাকায় এত বাজার দিয়ে হাজার খানেক পরিবারের মুখে হাসিঁ ফুটিয়েছে। ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই সহায় সংগঠনকে।